রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম:
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃত ঢাকা ট্রিবিউনের খুলনা প্রতিনিধি ও দৈনিক প্রবাহের সিটি এডিটর হেদায়েত হোসেন মোল্লার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বুধবার দুপুর ১২টার দিকে খুলনা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক নয়ন বিশ্বাস এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী তারিক মাহমুদ জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) সরদার ইব্রাহিম হোসেন সাত দিনের রিমান্ড দাবি করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের হওয়া মামলায় গত মঙ্গলবার বিকেলে খুলনার গল্লামারী এলাকা থেকে হেদায়েত হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়।
গত ৩০ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা তার কার্যালয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন। ওই ফলাফলে খুলনা-১ আসনে মোট ভোটারের চেয়ে ২২ হাজারেরও বেশি ভোটগ্রহণ হয়েছে মর্মে ঢাকা ট্রিবিউন ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। যা সঠিক নয়।
এ ঘটনায় সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বটিয়াঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বাদী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায়ই সাংবাদিক হেদায়েত হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া মামলায় মানবজমিনের খুলনা প্রতিনিধি রাশিদুল ইসলামকেও আসামি করা হয়েছে।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ আসনে ঘোষিত ফলাফলে প্রদত্ত ভোটের সংখ্যা ও মোট ভোটারের সংখ্যার পার্থক্য নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করায় দু’জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন খুলনার বাটিয়াঘাটা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা। ইতেমধ্যে একজন সাংবাদিককে গ্রেফতারও করা হয়েছে। বুধবার এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)।
আসক উল্লেখ করতে চায় যে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারাসমূহ এর ব্যাপকতা, ভুল বা ভ্রান্ত তথ্য প্রকাশের দায়ে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা, ১৪টি অপরাধ জামিন অযোগ্য ঘোষণা প্রভৃতি কারণে শুরু থেকেই নানা পর্যায়ে সমালোচিত হয়ে আসছে।
সাংবাদিকরা এ আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রকে সংকুচিত করে তুলবে বলে বারংবার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ আইনের আওতায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতার প্রকৃতপক্ষে সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের শংকা আরো বৃদ্ধি করবে। অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো ভুল তথ্য বা সংবাদ পরিবেশন করা হলে সেটির জন্য সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও তার প্রেক্ষিতে গ্রেফাতার নয়, বরং ভুল সংশোধনের কিংবা ব্যাখ্যা প্রদানের সুযোগ দেয়া যুক্তিযুক্ত কেননা সাংবাদিকরা সাধারণত বিভিন্ন সূত্র থেকে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের সংবাদ উপস্থাপন করে থাকেন। আসক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় গণমাধ্যমের প্রত্যাশিত ভূমিকা এবং সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এ ঘটনার বৃহত্তর প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে গ্রেফতারকৃত সাংবাদিককে দ্রুত মুক্তি দেয়ার এবং দুই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাচ্ছে।