মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৮ পূর্বাহ্ন
কাজী জমিরুল ইসলাম মমতাজ, স্টাফ রিপোর্টার সুনামগঞ্জ:
দক্ষিণ সুনামগঞ্জে লন্ডন প্রবাসীর মালিকানাধীন জমির সীমানার খুঁটি তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সরেজমিন, প্রত্যক্ষদর্শী ও লন্ডন প্রবাসী জগন্নাথপুর উপজেলার মীরপুর গ্রামের মৃত হাসিম উল্লার ছেলে মো: ছোয়াব উল্লার নিয়োজিত আম-মোক্তার কবির আহমদের কাছ থেকে জানা যায়, দক্ষিণ সুনামগয়েঞ্জ উপজেলার পূর্বপাগলা ইউনিয়নের রনসী গ্রামে বিগত ২০ আগস্ট ২০১৪ ইং সনে ৫০৫নং দলিল মূলে লন্ডন প্রবাসীর ক্রয়সূত্রে মালিকানাধীন ১০.৮০ একর ভুমিতে ফিশারীর ব্যবসা রয়েছে। বিগত ২৯ জানুয়ারী সরকারি সার্ভেয়ার কর্র্র্তৃক উক্ত জায়গার সীমানা নির্ধারণ করে ফিশারী ও জমির চতুর্দিকে ২০টি পিলার (খুঁটি) নিমার্ণ করা হয়। পিলার নির্মাণের পরদিন রাতের অন্ধকারে প্রভাবশালী দুর্বৃত্তরা সীমানার পিলারগুলো তুলে নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
কবির আহমদ আরও জানান, প্রবাসীর মালিকানাধীন জায়গা শতক হিসেবে অবৈধভাবে জোরপূর্বক রনসী গ্রামের মোশাহিদ আলী কালামাটি বিক্রি করে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে আসা শতাধিক লোক কালামাটি তুলছেন। তাদের সাথে আলাপ করলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই জানান, আমরা অনেকেই না জেনে রনসী গ্রামের মোশাহিদের কাছ থেকে এই কালামাটি কিনেছি। বর্তমানে আমরা জানতে পেরেছি এই জায়গা লন্ডন প্রবাসীর, এখন আমরা এই জায়গা থেকে আর কালামাটি তুলব না। এছাড়া গত মঙ্গলবার দেখেছি সার্ভেয়ার জায়গা নির্ধারণ করে দেওয়ার পর খুটি নিমার্ণ করা হয়েছে। কিন্তু রাতের অধারে কে-বা কারা নিয়েছে তা আমরা দেখি নাই।
জানা যায়, ছোয়াব উল্লা লন্ডন প্রবাসে থাকাবস্থায় রনসী গ্রামের মৃত আবির আলীর ছেলে মোশাহিদ আলী ও সিদুখাই গ্রামের আসাদ মিয়াগংরা বিভিন্নভাবে পায়তারা করে দলিল ও মাঠপর্চা জালিয়াতির মাধ্যমে তাহার জায়গা দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। খবর পেয়ে দেশে এসে তিনি গত ২৪ ডিসেম্ভর ২০১৮ ইং তারিখে এদের বিরুদ্ধে দলিল ও মাঠপর্চা জালিয়াতির বিষয়ে আমল গ্রহণকারী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত সুনামগঞ্জে সিআর ২০৭নং মোকদ্দমা দায়ের করেন। মোকদ্দমা দায়েরের পর বিগত ২৫ ডিসেম্ভর বিকালে লন্ডন প্রবাসী তার মালিকানাধীন রনসী গ্রামের ফিশারীতে গেলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে মোশাহিদ আলীগংরা দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে প্রবাসীর ফিশারীতে প্রবেশ করিয়া গালিগালাজ শুরুর এক পর্যায়ে প্রবাসী প্রতিবাদ করলে মোশাহিদ আলীসহ ১২/১৩ জনের একটি গ্রুপ মারধর করে তাকে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত হয়ে প্রবাসী হাসপাতালে থাকার সুবাধে মশাহিদ আলীগংরা জোরপূর্বক তার জায়গা শতাংশ হিসাবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা হারে বিভিন্ন গ্রামের মানুষের কাছে গর্ত করে কালামাটি নেওয়ার জন্য বিক্রি করে দেয়। এই সুবাধে প্রতিদিন শত শত মানুষ জায়গা গর্ত করে হাজার হাজার মন কালামটি তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
প্রবাসীর নিযুক্ত আম-মোক্তার কবির আহমদ তার মালিকানাধীন জায়গা থেকে কালামাটি বিক্রি বন্ধের দাবীতে গত ৫ জানুয়ারী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বরাবর মোকদ্দমা দায়ের করা হয়েছে। বিবিধ মোকদ্দমা নং-৪, তারিখ ০৫ জানুয়ারী ২০১৯।
এ ব্যাপারে লন্ডন প্রবাসীর নিয়োজিত আম-মোক্তার কবির আহমদ জানান, অভিযোগের আলোকে থানা পুলিশ ও সরকারি সার্ভেঢার ঘটনাস্থলে গিয়ে জায়গা নির্ধারণ করে খুঁটি নির্মাণ করে দেওয়ার পর রাতের আধারে এই খুঁটিগুলো তুলে নেয় দুর্বৃত্তরা, এ ব্যাপারে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার অজয় দাশ জানান, আমরা লন্ডন প্রবাসীর জায়গা থেকে সরকারি জায়গা পৃথক করে খুঁটি মেরে এসেছি। বর্তমানে যদি এই জায়গায় খুঁটি কেউ তুলে নেয় তাহলে আমি তা সরেজমিন তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠাব।