বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:০৪ অপরাহ্ন
মাইদুল ইসলাম মাইদুল:
আজ দিনটি ভালোই গেলো।জীবনের কোন কাজ আপনার জীবনে কখন কিভাবে ফল হয়ে ফিরে আসবে তা বলা মুশকিল। আবার কেউ কেউ ভালো কাজের বিনিময়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জিত হয়েছে। অবশ্য আমার দুটোর স্বাদ রয়েছে।
অনেক দিন আগে একবার কুলঞ্জ ইউনিয়নের ফকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ের আয়োজিত একটা বিশাল অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম আমার বাবা মরহুম মশাহিদ মিয়ার সাহেবের সাথে। সেই অনুষ্ঠানে অত্র এলাকার সব গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ করার মতো লোকের মধ্যে সাংসদ শ্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বাউল শাহ আবদুল করিম, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আমার বাবার বাল্যবন্ধু, সহপাঠী তোফায়েল আহমদ চৌধুরী, স্কুল প্রতিষ্ঠাতা মহুরম সুফি মিয়া চেয়ারম্যান সাহেব, আজির উদ্দিন চেয়ারম্যানসহ আরও অনেক শ্রদ্ধাবাজন ব্যক্তিত্ব। ছিলেন দেশবরেণ্য শিল্পীবৃন্দ। মনে আছে তখন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাঞ্জেরী কবিতা আবৃত্তি করছিলাম। সেই প্রোগ্রামে তোফায়েল আহমদ চৌধুরী সাহেবের মেয়ে দুটো গান পরিবেশন করেছিলো। আজ শুনলাম সে আমেরিকাতে ডাক্তার হিসেবে আছে। কথাগুলো বলতে হলো আমার লেখার প্রথম বাক্যের জন্য।
বক্তব্যের পালায় সবাই-ই মানুষের মধ্যে একটা কথা প্রচারের চেষ্টায় ছিলেন একজন মানুষ তার মমতা মিশিয়ে এই মানুষ গড়ার কারখানা (বিদ্যালয়) গড়ে তুলেছেন। কিন্ত আপনারা যারা এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আছেন তাদেরকেও ভালো হতে হবে, তবেই এর থেকে ভালো সুফল বা প্রোডাক্ট বেরিয়ে আসবে। কিন্তু আমার বাবা উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সিনিয়র সহ-সভাপতি মরহুম মশাহিদ মিয়া চেয়ারম্যান অন্যরকম একটা বক্তব্য দিয়েছিলেন। তিনি তার বক্তৃতায় প্রথমেই প্রিন্সিপাল আব্দুল মান্নান চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ভাটির গণমানুষের নেতা জননেতা গুলজার আহমদ, কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রিয় চেয়ারম্যান মুক্তিযুদ্ধা মরহুম গোলাম রাব্বানী চৌধুরী চাচা ও সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল মান্নান সাহবের নাম উল্লেখ করে বলেছিলেন, এই সুসন্তানদের পরবর্তী প্রজন্ম এখানে পড়াশোনা করবে। এর দেখাশোনার ভারও তাঁদের হাতেই আছে তা এটা একটা ভালো প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে। হয়েছিল ও তা-ই। কালের পরিক্রমায় তা হয়তো গতি হারিয়েছে। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছে।
বক্তব্যে আব্বা এমন কথা বলায় সমসাময়িক কেউ কেউ এদিক ওদিক তাকিয়ে সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন। সবাইকে অবাক করে দিয়ে আমার বাবাকে উদ্দেশ্য করে বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বেশ মজা করেই বলেছিলেন, যার যে পাগরী তাকেই ভাতিজা পরিয়েছে, সে শিক্ষার প্রতি সদয় ও তার নিজেকে তৈরী হওয়ার পেছনের অনুপ্রেরণা হলেন উনারা। আমার সাথে রাজনীতি করে কিন্তু তার বেড়ে উঠা তাদের সাথে। যেমন গোডাউন তেমন প্রোডাক্ট। তাকে আমরা যেখানেই রাখিনা কেন সে তার অবস্থা জানান দিবেই।
আজ আমার এমনই একটি বিষয় চোখে পড়ল। দীর্ঘদিন পরে বাবার বন্ধুত্বের সম্পর্ক আছে এমন একটা পরিবারের সন্তান আমার যেকোনো একটা বিষয় অবগত হয়ে আমার জন্য উনার সহানুভূতিশীল উদার মনের পরিচয় দিলেন। কৃতজ্ঞতা ভরে নির্মল নিষ্পাপ সম্পর্কের উল্লেখ করলেন। আর অন্যদিকে আমার পরিবার ও আমার ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে উপকৃত দুঃসময়ে কাছে পাওয়া একটা পরিবারের সন্তানের প্রতিক্রিয়া দেখলাম। পরে আরও মূলে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, নিজে যাচাই করে দেখলাম। পরে বুঝতে পারলাম তিনি প্রোডাক্ট হিসেবে ভালো ছিলেন না। তাই তার উৎস থেকে পন্য সামগ্রি ভালো হওয়ার কথা না।