সিজদারত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন দেশের শীর্ষ স্থানীয় আলেমে দ্বীন, আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়্যব রহ.। দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রাচীনতম দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জামিয়া আরবিয়া জিরির সম্মানিত মুহতামিম, প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় ওয়ায়েজ, বরেণ্য ইসলামী ব্যক্তিত্ব, আল্লামা শাহ মুহাম্মদ তৈয়্যব রহ. রাতে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। জানামতে তিনি এতদিন ইতিকাফে ছিলেন। কদিন পূর্বে থেকে তিনি শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থও ছিলেন। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি মেডিকেলে প্রবেশ করতেই তড়িঘড়ি করে জায়নামাজে দাঁড়িয়ে যান। পরবর্তীতে সিজদারত অবস্থায় তিনি শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করে মহান প্রভুর সান্নিধ্যে পাড়ি জমান।
তিনি একাধারে দেশের প্রখ্যাত ও শীর্ষ স্থানীয় একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, ঈমানী রাহবার ও পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আল্লামা মুহাম্মদ তৈয়ব সাহেব রহ. বহু গুণে গুণান্বিত একজন বুজুর্গ ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর অসাধারণ যুক্তিনির্ভর, গাম্ভীর্যপূর্ণ উচ্চারণে যে কেউ অনুপ্রাণিত হতো। তাঁর আন্তরিকতাপূর্ণ দু’আয় চোখ ভেজাতো যে কারো। তাঁর দরদী হেদায়াতি আলোচনায় পথ খুঁজে পেতো অসংখ্য পথহারা বনি আদম। তাঁর হাস্যোজ্জ্বল চাহনি যে কাউকে মুগ্ধ করতো। তিনি ছিলেন কওমী অঙ্গনের একজন অভিভাবক আলেমে দ্বীন। তিনি ছিলেন এদেশের এক পথ নির্দেশক আলেম। এ মুহূর্তে তাঁর ব্যক্তিত্ব ও অভিভাবকত্বের জায়গাটিতে যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে, তা কখনো কিছুতেই পূরণ হবার নয়।
এমন সৌভাগ্যের মৃত্যু ক’জনের ভাগ্যেই বা জুটে? সারা মাস রোজা রেখে আবার ইতিকাফে থেকে ঈদের রাতে মহান প্রভুর সান্নিধ্যে চলে যাওয়া, সিজদারত অবস্থায় মৃত্যু নসীব হওয়া এতসব সত্যিই সৌভাগ্যের ব্যাপার। এমন সৌভাগ্যের মৃত্যু একমাত্র আল্লাহর প্রিয় বান্দারাই পেয়ে থাকেন। রমজানের রোজা পালনকারীরা ঈদের রাতে মহান আল্লাহ পক্ষ হতে পুরস্কার পেয়ে থাকেন। যে পুরস্কার তুলনাহীন। আল্লাহর এই প্রিয় বান্দাও সম্ভবত রমজানের পুরস্কার হিসেবে এমন রাতে মৃত্যু কামনা করেছিলেন। আল্লাহ বোধহয় তাঁর সেই দোয়াটিই কবুল করে এমন পবিত্র একটি রাতে সিজদারত অবস্থায় মৃত্যু নসীব করেছেন। আল্লাহু আকবার! আল্লাহ আমরাও এমন মৃত্যু চাই। মৃত্যু তো একদিন আসবে। আমাদের মৃত্যুটাও যেন জায়নামাজে সিজদারত অবস্থায় হয়।