রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১
সৌদি যুবরাজদের মাদক আর যৌনতার ইতিহাস

সৌদি যুবরাজদের মাদক আর যৌনতার ইতিহাস

riyad-300x167আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : সোমবার লেবাননের বৈরুত বিমানবন্দরে এক সৌদি যুবরাজ তার ৪ সহযোগীসহ দুই টনেরও বেশি কোকেন ও অ্যাম্ফিটামিন ক্যাপ্টাগন ট্যাবলেট নামের মাদক বোঝাই সৌদিগামী একটি ব্যক্তিগত জেট বিমানসহ আটক হয়েছেন। নাম প্রকাশিত না হওয়া ওই যুবরাজের ভাগ্যে কি ঘটে তাই এখন দেখার বিষয়। তবে ইতিহাস বলছে, যুবরাজ যদি তার দেশে ফিরতে পারেন তবে পরাক্রমশালী সৌদি রাজপরিবার তাকে শাস্তির খড়্গ থেকে রক্ষা করতে পারবে। কারণ আগেও বিভিন্ন সময় সৌদি যুবরাজরা মাদক চোরাচালানের অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও রাজপরিবারের বদান্যতায় শাস্তি এড়াতে পেরেছেন। ১৯৯৯ সালে সৌদি যুবরাজ নায়েফ বিন সুলতান বিন ফাওয়াজ আল সালান ভেনেজুয়েলা থেকে ফ্রান্সে ২ টন কোকেন পাচারের সময় ধরা পড়েন।যুবরাজ নায়েফ তার রাজপরিবারের পরিচয় ব্যবহার করে সৌদি সরকারের একটি জেট বিমানে মাদক পাচারের দায়ে ফ্রান্সে অভিযুক্ত হন। যুবরাজ নায়েফকে যুক্তরাষ্ট্রও কোকেন সরবারহকারী হিসেবে চিহ্নিত করে। তবে এত কিছুর পরেও যুবরাজকে কোনো শাস্তি পেতে হয়নি। শোনা যায়, বর্তমানে প্রিন্স নায়েফ সৌদি সরকারের আইনগত আশ্রয়ে বেশ আরাম-আয়েশেই আছেন। ২০১০ সালে উইকিলিকস একটি জাঁকজমকপূর্ণ রাজকীয় গোপন পার্টির ভিডিওচিত্র ফাঁস করে। ভিডিওটির বর্ণনা অনুযায়ী আল তুনায়ান পরিবারের এক যুবরাজ এই হ্যালোইন পার্টির আয়োজক-যেখানে ১৫০ জনেরও বেশি অভিজাত তরুণ-তরুণী অংশ নিয়েছিলেন। এই পার্টিতে ব্যয়বহুল মদ, কোকেন ও হাসিস পরিবেশন করা হয়। সৌদিআরবে শরিয়াহ আইন আল সৌদ রাজপ্রাসাদে বসবাসকারী প্রায় ১৫,০০০ যুবরাজ ও যুবরাজ্ঞীদের ক্ষেত্রে শিথিল করা হলেও রাজপরিবারের বাহিরের সাধারণ প্রজা ও বিদেশিদের বেলায় এতটুকুও ছাড় দেয়া হয় না।

সম্প্রতি সৌদি কর্তৃপক্ষ বেশকিছু লোককে মাদক চোরাচালানের জন্য প্রকাশ্য শিরশ্ছেদ করে শাস্তি প্রদান করেছে। এদের মধ্যে ২ জন পাকিস্তানি নাগরিকও ছিলেন। পাকিস্তান সরকার ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও সৌদি সরকার তাদের শাস্তি প্রদানের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করেনি। সিরিয়া যুদ্ধে ক্যাপ্টাগন পিলের ব্যাপক ব্যবহার লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই ভয়াবহ মাদকটি সৈনিক ও যোদ্ধাদের ক্লান্তি দূর করে চনমনে করে তোলে। তাই পক্ষের ও বিপক্ষের সব সৈন্যদের কাছেই এটি সমান জনপ্রিয়। মাদক চোরাকারবারিরা এই ট্যাবলেট বিক্রয় করে লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নিচ্ছে। জানা যায়, এই মাদক চক্রের সাথে কয়েকজন সৌদি যুবরাজও জড়িত। লেবাননের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এই মাদক পাচারের ঘটনাটি সৌদি রাজপরিবারের সাম্প্রতিক দুঃসময়কে আরো ঘণীভূত করে তুললো। গত সেপ্টেম্বরে এক সৌদি যুবরাজ তার গৃহকর্মীকে নির্যাতনের দায়ে মার্কিন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন।

গত সপ্তাহে একই যুবরাজের বিরুদ্ধে আরো ৩ নারী গৃহকর্মী শারিরীক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ দাখিল করে। তারা অভিযোগ করেন যে যুবরাজ বলেছেন, ‘আমি একজন প্রিন্স। আমি যা খুশি তাই করব। তোমরা কোন ছাই!’ তিনি তিন গৃহকর্মীকে হত্যারও হুমকি দেন। ওই যুবরাজের বিরুদ্ধে সমকামিতারও অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে, সৌদি আইনে যার শাস্তি প্রকাশ্য শিরশ্ছেদ। দোষী সাব্যস্ত হলেও সৌদি প্রিন্সের সাজা খাটার আশঙ্কা নেই। যেমন ২০১০ সালে ব্রিটেনে এক হোটেল পরিচারিকাকে হত্যার দায়ে প্রিন্স সৌদ বিন আবদুলআজিজ বিন নাসির আল সৌদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার ২০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করার কথা ছিল। কিন্তু ২০১৩ সালেই তাকে ‘অবশিষ্ট সাজা খাটার জন্য’ সৌদি পাঠিয়ে দেয়া হয়। আর এভাবেই তিনি সাজা থেকে রক্ষা পান। এ রকম নানাবিধ অপকর্মের মূল হোতা সৌদি যুবরাজরা মাদক, নারী ও জুয়ায় আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত আইন ভঙ্গ করলেও সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্মানোর সৌভাগ্যই তাদেরকে শাস্তির হাত থেকে রক্ষা করে চলেছে। সূত্র : ফরেন পলিসি সাময়িকীতে প্রকাশিত সিওভান ও’গ্রাডির নিবন্ধ

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com