মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৭ অপরাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
মাত্র কয়েক মিনিটের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে একটি গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি। ভেঙে পড়েছে প্রচুর গাছপালা। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ঘটনার আকস্মিকতায় ভেঙে পড়েন সবাই। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাথারিয়া ইউনিয়নের দরগাহপুর গ্রামে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পাড়ে প্রায় অর্ধকোটি টাকা হতে পারে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ১২টার পর হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে আঘাত হানে দরগাহপুর গ্রামে। ঘুমন্ত লোকজন কিছু বুঝে উঠার আগেই লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় গ্রামের অধিকাংশ ঘরবাড়ি। এতে গ্রামে প্রায় ৬২টি ছোট-বড় ঘর আক্রান্ত হয়েছে বলে গ্রামবাসি জানান। তাছাড়া দিরাই-মদনপুর সড়ক ও গ্রাম মিলে প্রায় কয়েক শতাধিক গাছপালা ভেঙে পড়েছে।
জানা যায়, ভয়াবহ এই ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গ্রামের মৃত আব্দুল আজিমের ছেলে মাওলানা তালহা, তার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩ লাখ টাকা। এছাড়া মৃত উসমান খানের ছেলে মৃত মাওলানা তাজুল ইসলাম খান ও তার ভাই আব্দুল মতিন খানের ঘর, ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ লাখ টাকা। মৃত রজব খানের ছেলে এমরান খানের ৫০ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মৃত ইছমত খানের মেয়ে রুহেনা বেগমের ১ লাখ টাকা, মৃত তাজ উদ্দিনের ছেলে ইউনুছ আলীর ৩০ হাজার টাকা, মৃত আব্দুল হান্নানের ছেলে নিজাম উদ্দিনের ৫০ হাজার টাকা, মৃত ছাদ উল্লাহর ছেলে মাসুক আলীর ৩০ হাজার টাকা, মৃত আব্দুল পাঠানের ছেলে আনহারের ২ লাখ টাকা, আব্দুল কদ্দুছ খানের ছেলে খালেদ খানের ৫০ হাজার টাকা, মৃত ইজ্জুল পাঠানের ছেলে মারুফ পাঠানের ১ লাখ টাকা, মৃত আছির পাঠানের ছেলে জাহিদ পাঠানের ১ লাখ টাকা, মৃত নবাব খানের ছেলে আব্দুর রহমানসহ তিন পরিবারের ৫ লাখ টাকা, মৃত আব্দুর রহিম খানের ছেলে ফয়জুল খানেসহ তিন পরিবারের ৫ লাখ টাকা, মৃত মস্তাব আলীর ছেলে আতাবুর রহমানের ৫০ হাজার টাকা, আলিফ পাঠানের ছেলে মুসলিম পাঠানসহ চার পরিবার মিলে ৫ লাখ টাকা, মৃত আব্দুল মনাফের ছেলে আব্দুল মগনির ৫০ হাজার টাকা, মৃত আব্দুল হেকিমের ছেলে মুক্তার আলীর ৫০ হাজার টাকা, মৃত আব্দুল মালিক খানের ছেলে উবায়দুল্লাহ খানের ৫০ হাজার টাকা, মৃত তাহির খানের ছেলে নোমান খান ও মাওলানা কবির খানের ২ লাখ টাকা, মৃত মফিজ আলীর ছেলে আব্দুল জাহিরের ২ লাখ টাকা, সিরাজ মিয়ার ছেলে বাবলু মিয়ার ৫০ হাজার টাকা ও মৃত ওয়াজ মুন্সির ছেলে রশিদ মিয়ার প্রায় ১ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। বর্তমানে অধিকাংশ পরিবারের লোকজন খোলা আকাশের নিচে রয়েছেন বলে দেখা গেছে।
এদিকে দরগাহপুর গ্রামে স্মরণকালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হওয়ার পর তাদের অবস্থা জানতে খবর পেয়ে উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিগণ দেখতে এসে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তারা সম্ভাব্য সকল প্রকার সহযোগিতারও আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।