সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:২০ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
ঘন কুয়াশার মধ্যেই মাথায় নানা শঙ্কা আর কৃষিপণ্যের উচ্চ মূল্যের মধ্যেও শুরু হয়েছে বোরো ধানের আবাদ। এ বছর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ হাজার হেক্টর জমি। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ৪৩৪ মেট্রিকটন চাউল। দিরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র মতে, উপজেলা ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের জন্য এক হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে বোরো ধানের চারা। এরমধ্যে হাইব্রিড ৫৩৭ হেক্টর, উফশী ৮২২ হেক্টর ও স্থানীয় হেক্টর। বোরো আবাদের মধ্যে হাইব্রিড ১৩ হাজার ৪২৯ হেক্টর, উফশী ১৬ হাজার ৪৩৬ হেক্টর ও স্থানীয় ১৩৫ হেক্টর জমিতে ধান রোপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এদিকে ৩০ হাজার জমিতে চাষকৃত ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ২৭ হাজার ৪৩৪ মেট্রিকটন চাউল। এরমধ্যে হাইব্রিড ৬৪ হাজার ৫৬ মেট্রিকটন চাউল, উফশী ৬৩ হাজার ১২৪ মেট্রিকটন ও স্থানীয় ২৫৪ মেট্রিকটন।
এদিকে হাওর এলাকার এক ফসলী বোরো আবাদে দিন দিন খরচ বেড়েই চলছে। জমি বর্গা (রংজমা) নেয়া থেকে শুরু করে ধান কেটে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি কেয়ারে যে পরিমাণ খরচ আসে, সে পরিমাণ উৎপাদন হয় খুব কম। তারপরও একজন কৃষক শুধুমাত্র লাভের আশায় প্রতি বছর নানা শঙ্কা আর আতঙ্ক নিয়েই বোরো আবাদ করে যাচ্ছেন।
দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের টুকদিরাই গ্রামের মৃত সোনা উল্লাহর ছেলে আফাজ উদ্দিন জানান, বর্তমানে বোরো আবাদ করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে গেছে। তারপর সংসারের খরচপাতি চালাতে মাথায় ঝুঁকি ও নানা শঙ্কা নিয়েই কাজ করছি। তার দেয়া হিসেব মতে, প্রতি কেদার জমি বর্গা (রংজমা) নিতে হয় হাওর ভেদে কমপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা, বীজ ক্রয় পাঁচশত টাকা, চাষ পাঁচশত টাকা, রোপন এক হাজার টাকা, সার এক হাজার দুইশত টাকা, পানি ও পরিচর্ষা তিন হাজার টাকা, ধান কাটা ও ঘরে তোলা খরচ তিন হাজার টাকা। তিনি আরও জানান, আমাদের হাওর এলাকায় চৈত্র মাসে আগাম বন্যা, খড়া ও শিলাবৃষ্টির আতঙ্ক থাকে প্রতিনিয়ত। তারপরও আমরা সোনার ফসল ফলানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ বছর কৃষি প্রণোদনা হিসেবে পাঁচ কেজি বীজ ও ১০ কেজি সার দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।