বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৮ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার:
মাত্র ২০ হাত জায়গার উপর একটি কাঠের সেতু বানিয়ে জনসাধারণের সুবিধার চেয়ে এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে সেতুটি। অপ্রয়োজনীয় ও অপরিকল্পিত সেতুতে উঠতে গিয়ে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে যানবাহন। সর্বশেষ একটি পিকআপ উঠার কারণে তা ভেঙ্গে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার দিরাই উপজেলার করিমপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের জয়নগর গ্রামের দক্ষিণপার্শ্বে স্থাপিত কাঠের সেতুটি এখন জনসাধারণের চলার অনুপযোগি হয়ে আছে। বেশ কয়েক বছর যাবত এখানে মাটির সড়ক থাকলেও গত ভয়াবহ বন্যায় সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয়। ২০২২ সালের ২১ জুলাই থেকে ৩রা সেপ্টেম্বরের ভেতরে এই সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়। ৬০ ফুট দৈর্ঘ, ৮ ফুট প্রস্থ ও ১৬ ফুট উচ্চতার দুটি সেতুর সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ লাখ ৬ হাজার ৩৭৫ টাকা।
বিশ্বস্ত বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, আগে মাটির রাস্তা থাকায় যে কোন প্রকার যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারত। এই সেতুটি হওয়ার ফলে হেমন্তে দিরাই থেকে সাকিতপুর, রজনীগঞ্জ বাজারসহ পূর্বাঞ্চলে প্রচুর মোটর সাইকেল চলাচল করে। এছাড়া সিএনজি, পিকআপ, এক্সেভেলেটর, লাইটেস, ধান কাটার মেশিনসহ বিভিন্ন ধরণের যানবাহন চলে। এ বছর এগুলো চলাচল করতে গিয়ে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনার শিকার হয়। সর্বশেষ মালামাল নিয়ে একটি পিকআপ উঠে গেলে কাঠের সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে যায়। তাছাড়া সেতুটিতে মোটর সাইকেল উঠতে গিয়ে স্লিপ কেটে নিচে পড়ে গিয়ে চালকের হাত ভেঙ্গে যায়। বালু, পাথর, সিমেন্ট ও লোহার রড নিয়ে বেশ কয়েকটি ট্রলি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এতে কোন ধরণের প্রাণহানি না ঘটলেও প্রচুর মালামাল নষ্ট হয়েছে বলে জানা গেছে।
সেতুর পার্শ্ববর্তী জয়নগর গ্রামের বেশ কয়েকজন জানান, এখানে সেতু নির্মাণে আমরা নিষেধ করেছি, কিন্তু কেউই আমাদের কথা শুনেনি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার নিজেদের স্বার্থে বাস্তব অবস্থা চিন্তা না করেই সেতুটি করতে অনুমতি দিয়েছেন। তাদের মতে, সেতুর মালামাল আনতে যে পরিমাণ টাকা ব্যয় হয়েছে, শুধুমাত্র এ টাকা দিয়েই এখানে স্থায়ী সড়ক (আবুরা) নির্মাণ করা সম্ভব।
করিমপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড মেম্বার দিলীপ বর্মণ বলেন, এখানে যখন সেতু করা হয়, তখন পানি ছিল প্রচুর। সাধারণ মানুষের চলাফেরা করার জন্যই সেতু নির্মাণের অনুমোদন দেয়া হয়। একটি পিকআপ উঠে সেতুটি ভেঙ্গে গেছে। গাড়ির মালিককে মেরামত করার জন্য বলেছি। এই মেরামতে ইউনিয়ন পরিষদ দায়বদ্ধ নয়।