শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

তৃতীয়বারের মতো এমপি হলেন ড. জয়া সেনগুপ্তা

amarsurma.com
তৃতীয়বারের মতো এমপি হলেন ড. জয়া সেনগুপ্তা

আমার সুরমা ডটকম:

সদ্য সমাপ্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীকে নির্বাচিত তৃতীয়বারের মতো এমপি হয়েছেন প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তা। তিনি সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদকে (আল আমিন চৌধুরী) ৯ হাজার ১০৩ ভোটে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করেন। তার প্রাপ্ত ভোট ছিল ৬৭ হাজার ৭৭৫ ভোট, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীকের পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৬৭২ ভোট।
জানা যায়, রাজনৈতিক সচেতন এলাকা হিসেবে পরিচিত সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে স্বাধীনতা সংগ্রামের পর থেকেই প্রথমে ন্যাপ থেকে এবং পরে আওয়ামী লীগ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। ২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত মৃত্যুবরণ করলে উপ-নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হন সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের স্ত্রী ড. জয়া সেনগুপ্তা। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিরাই-শাল্লা আসনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে ড. জয়া সেনগুপ্তা নির্বাচিত হন। তবে বিভিন্ন কারণে এবার মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
স্বাধীনতার পর থেকে প্রয়াত জাতীয় নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ৮ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নাছির উদ্দিন চৌধুরীর কাছে প্রথমবারের মতো পরাজিত হয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। স্বাধীনতা সংগ্রামের পর থেকে এ আসনটি রাজনৈতিক সচেতন এলাকা হিসেবেই পরিচিত। অতীতে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে অবশ্য প্রত্যেকবারই দ্বিমুখী প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়েছে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা সীমাবদ্ধ থাকতো মূলত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ও নাছির উদ্দিন চৌধুরীর মধ্যে। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে নাছির চৌধুরী এ আসনে বলিষ্ট পারলামেন্টারিয়ার সুরঞ্জিত সেনগুপ্তকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের প্রয়াণের পরে তার সহধর্মিনী ড. জয়া সেনগুপ্তা আসেন নাছির উদ্দিন চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীতায়। এমপি ধাকাবস্থায় বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত ২০১৭ সালে মারা যান। তাঁর শূণ্য আসনে উপ-নির্বাচন ও একাদশ জাতীয় সংসদে তিনি আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা।
এক সময় দিরাই-শাল্লা ছিল বাম রাজনীতির ঘাঁটি। সেখান থেকে সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী অক্ষয় কুমারকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সংসদে প্রজ্ঞাপূর্ণ বক্তব্য ও বাগ্মিতা তাকে জাতীয়ভাবে পরিচিত করতে সক্ষম হয়েছিলেন। আস্তে আস্তে তিনি হয়ে উঠেন একজন সংবিধান বিশেষজ্ঞ। তিনি ন্যাপ, গণতন্ত্রী পার্টি ও আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন ৮ বার।
১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সংসদ নির্বাচনে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ আজাদকে পরাজিত করে ন্যাপ থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সে সময় সুরঞ্জিত পেয়েছিলেন ৮০ হাজার ৮২০ ভোট, আর আব্দুস সামাদ আজাদ পেয়েছিলেন ৪৫ হাজার ১৭২ ভোট। ১৯৭৯ সালে তিনি আবারও ন্যাপ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় নির্বাচনেও তিনি ন্যাপ থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯১ জাতীয় নির্বাচনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গণতন্ত্রী পার্টি থেকে নির্বাচিত হন।
১৯৯৬ সনের ১২ জুনের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগে যোগদানের পর স্থানীয় আওয়ামী লীগে বিভেদের কারণে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী নাসির উদ্দিন চৌধুরীর কাছে মাত্র ৫০৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি পেয়েছিলেন নৌকা প্রতীকে ৫৮ হাজার ৪৯৬ ভোট এবং নাসির উদ্দিন চৌধুরী লাঙ্গল প্রতীকে পেয়েছিলেন ৫৯ হাজার ভোট। পরবর্তীতে পাশের আসন বানিয়াচং-আজমীরিগঞ্জ থেকে তিনি উপ-নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা হয়েছিলেন। ২০০১, ২০০৮ এবং ২০১৪ জাতীয় নির্বাচনেও তিনি বিজয়ী হয়েছিলেন। সবশেষ তিনি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বেও ছিলেন। ২০১৭ সালের ৫ জানুয়ারী তিনি মারা গেলে তার স্ত্রী জয়া সেনগুপ্তা নির্বাচিত হন। পরে একাদশ জাতীয় নির্বাচনেও তার স্ত্রী বিজয়ী হন। পিএইচডি ডিগ্রিধারী জয়া সেনগুপ্তের বিরুদ্ধে কখনো কোনো মামলা ছিল না বলে জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com