বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৩ অপরাহ্ন

ব্রেকিং নিউজ :
প্রতিনিধি আবশ্যক: অনলাইন পত্রিকা আমার সুরমা ডটকমের জন্য প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে। আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন : ০১৭১৮-৬৮১২৮১, ০১৭৯৮-৬৭৬৩০১

দিরাইয়ে কুলঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেন বরখাস্ত

amarsurma.com
দিরাইয়ে কুলঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান একরার হোসেন বরখাস্ত

আমার সুরমা ডটকম:

শিক্ষককে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকি, কলেজে প্রবেশে বাধা প্রদান, এলাকায় আদিপত্য বিস্তার, স্কুল, মাদরাসা ও জলমহালের নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র, বিস্ফোরক, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনাসহ বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার ৯নং কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সক্রিয়কর্মী মোহাম্মদ একরার হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু রাফা মোহাম্মদ আরিফ স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। দিরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার সনজীব সরকার বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ একরার হোসেনের বিরুদ্ধে হাতিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ হেলাল উদ্দিনকে বিদ্যালয়ে প্রবেশে বাধা, এলোপাতাড়িভাবে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। একজন জনপ্রতিনিধি হয়ে এমন অমানবিক ঘটনা ঘটানোর দায়ে জেলা প্রশাসক সুনামগঞ্জ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন। একই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, যেহেতু চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে উল্লেখিত অভিযোগ, তার দ্বারা ইউনিয়ন পরিষদের ক্ষমতা প্রয়োগ প্রশাসনিক দৃষ্টিকোণে সমীচীন নয় মর্মে সরকার মনে করে। সেহেতু দিরাই উপজেলাধীন কুলঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ একরার হোসেন কর্তৃক সংঘটিত অপরাধমূলক কার্যক্রম ইউনিয়ন পরিষদসহ জনস্বার্থের পরিপন্থী বিবেচনায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪(৪) (খ) ও (ঘ) ধারার অপরাধে একই আইনের ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী উল্লেখিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে তার স্বীয় পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
কুলঞ্জ ইউনিয়নের হাতিয়া গ্রামের একাধিক লোকজন জানিয়েছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ একরার হোসেন আওয়ামী লীগের শাসনামলে এলাকায় অস্ত্রধারী বাহিনী গড়ে তুলেন। একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের মাধ্যমে স্কুল, মাদরাসা ও জলমহালের নিয়ন্ত্রণ নেন। তার বাহিনীর লোকজন অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হাতিয়া গ্রামে ও স্কুলে হামলার ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে পট পরিবর্তনের পর তিনি গা ঢাকা দেন। যৌথ বাহিনী তার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বিপুল দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরক, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মামলা রয়েছে। জানা যায়, কাগজে-কলমে নির্বাচন দেখিয়ে হাতিয়া স্কুল এন্ড কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি হন একরার হোসেন।
এ ঘটনায় একজন অভিভাবকের করা লিখিত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ২০২৩ সনের ১৮ ডিসেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঐ গভর্নিং বডি বাতিল করে। এ বিষয়ে একরার হোসেন উচ্চ আদালতে মামলা করলে ২০২৪ ইং সনের ৩০ জুন আদালত বাদীর বিরুদ্ধে রায় প্রদান করেন। বাদী একরার হোসেন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল দায়ের করেন। সভাপতি পদ টিকিয়ে রাখতে হাতিয়া স্কুল এন্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান ইউপি চেয়ারম্যান একরার। বিদ্যালয়ে হামলাসহ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে কয়েক দফায় মারধর ও প্রতিষ্ঠানে প্রবেশে নিষেধ দেন তিনি। এসব বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তে সত্যতা পাওয়া যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2017-2019 AmarSurma.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com