আমার সুরমা ডটকম ডেক্স :
বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিকে ভাঙ্গার জন্য সরকারের তৎপরতা নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে সেটিকে নাকচ করে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ঢাকায় আজ বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে তথ্যমন্ত্রী বলেন সরকারের দিক থেকে বিএনপিকে ভাঙ্গার কোন কারন নেই। বরং তার ভাষায় ভুল রাজনীতির কারণেই বিএনপি নিজেই বিভক্তির মুখে পড়েছে। তবে একই অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন বর্তমান সরকারের জনসমর্থন না থাকার কারণেই তারা বিএনপিকে ভাঙ্গার চেষ্টা করতে পারে।
তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন , “বেগম খালেদা জিয়া নিজেই এমন একটা ভুল রাজনীতি করেছেন তার ছেলেকে নিয়ে, সেজন্য তিনি নিজেই রাজনীতির বাইরে চলে যাচ্ছেন। এ কারণে দল ভাঙ্গার কথাটা এসেছে। এর জন্য আমরা কেউ দায়ী না।” এটা বিএনপি নেতৃবৃন্দকেই উত্তর দিতে হবে।
বাংলাদেশ সংলাপে উপস্থিত বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম বলেন , “যা রটে তার কিছু না কিছু বটে।” তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের কর্তাব্যক্তিরা উপলব্ধি করেন যে তাঁদের যথেষ্ট জনসমর্থন নেই। সেকারণে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ভাঙ্গার চেষ্টা করতে পারে। মি: আহমেদ বলেন , “বহুল আলোচিত দল জামায়াতে ইসলামের লোকজন এখন দলে দলে আওয়ামী লীগে যোগদান করছে। সুতরাং দল ভাঙ্গার প্রচেষ্টা ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। জামায়াতে ইসলামকে ভাঙ্গার চেষ্টা হচ্ছে, এরপর হয়তো বিএনপিকে ভাঙ্গার চেষ্টা হবে।”
তবে তথ্যমন্ত্রী বলেন দল ভাঙার ঘটনা পঁচাত্তরের পরে সামরিক শাসকরা করেছে। এরপরে দল ভাঙ্গার ঘটনা গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মি: ইনু বলেন, “আমরা ঐক্য করতে পারি, আমরা আরেকটা দল ভাঙ্গাব কেন?”
অনুষ্ঠানের আরেকজন প্যানেলিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ডঃ রওনক জাহান বলেন সরকার আসলেই বিএনপিকে ভাঙতে চায় কিনা সেটি স্পষ্ট নয়। তবে সে ধরনের চেষ্টা হলে তা দীর্ঘমেয়াদী সরকারের জন্য ভালো কোন ফল দেবে না। তিনি বলেন রাজনীতিবিদেরা ভবিষ্যতের কথা না ভেবে বর্তমানে কিভাবে টিকে থাকতে হবে সেই অনুযায়ী নীতি নির্ধারণ করছেন।
অধ্যাপক রওনক জাহান “এখন সেভাবেই হয়তো ভাবছেন এরা (বিএনপি) যদি কয়েকটি টুকরো হয়ে যায় তাহলো হয়তো তারা (বিএনপি) ক্ষমতাসীন হতে পারবে না।”
অনুষ্ঠানের আরেকজন প্যানেলিষ্ট সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ ইন্সটিটিউটের ভাইস প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন কবির বলেন, “বাংলাদেশে এমন কথা (দল ভাঙা) আমরা আগেও শুনেছি। কিন্তু তার কোন ইতিবাচক ফল আসেনি। এই ধরণের অনিশ্চয়তায় না যাওয়াটাই বাঞ্ছনীয়।”
তিনি বলেন প্রতিটি দল তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে কাজ করবে এবং জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে তারা কোন রাজনৈতিক দলকে পছন্দ করবে।
সুত্র : বিবিসি