আমার সুরমা ডটকম: মুক্তিযুদ্ধকালীন চট্টগ্রামে আল-বদর বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্র ডালিম হোটেলের হোতা জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শনিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছেন জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক। এর মধ্য দিয়ে কলঙ্কমোচনের পথে এগিয়ে গেল দেশ। এর আগে শনিবার রাতে কারাগারে প্রবেশ করেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এস এম আলম, সিভিল সার্জন ডা. আলী হায়দার খান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাহেনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মাহমুদ হাসান,গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন-অর -রশিদ। লাশ বহনের জন্য কারাগারে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা হয়।
এদিকে শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় ছয়টি মাইক্রোবাসে করে কাশিমপুর কারাগারের ফটকে উপস্থিত হন মীর কাসেমের স্ত্রী, মেয়ে, পুত্রবধূসহ মোট ৪৬ জন। তাদের মধ্যে ২৩ জনকে মীর কাসেমের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়। তারা সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন। শনিবার দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে অতিরিক্ত আইজি প্রিজন কর্নেল ইকবাল কবির কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলারের কাছে ফাঁসি কার্যকরের নির্বাহী আদেশের কপি হস্তান্তর করেন। এদিকে কাশিমপুর কারাগারের চারপাশে প্রায় এক বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। রাত ৮টা ৫০ মিনিটের পর সেখানে নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়। জেলা পুলিশের সঙ্গে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য মীর কাসেমকে ২০১৪ সালে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ বছরের মার্চে আপিল বিভাগেও সেই রায় বহাল থাকায় তিনি রিভিউ আবেদন করেন। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ গত ৩০ আগস্ট কাসেমের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেন। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হলে পরদিন সকালে তা আসামিকে পড়ে শোনানো হয়। মীর কাসেম প্রাণভিক্ষা চাইবেন কি না, তাও জানতে চাওয়া হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার একই প্রশ্ন করা হলে সময় চান তিনি। পরে কাশিমপুর কারাগার-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক শুক্রবার বিকেলে জানান, মীর কাসেম তাদের জানিয়েছেন, তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইবেন না।