শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৭ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম ডেক্স : মৃত্যু তাদের তাড়া করে ফিরছে। অদৃশ্য আততায়ী পেছন থেকে এসে হামলা করতে পারে যে কোন সময়। সেই আতংকে কাটে এখন তাদের প্রতিটি দিন, প্রতিটি ক্ষণ। চোখ-কান সবসময় খোলা রাখতে হয়।পাল্টে গেছে প্রাত্যহিক জীবনের ছন্দ। মৃত্যুর হুমকি পেয়ে অনেকটা আত্মগোপনে থাকা বাংলাদেশের এক ব্লগার ‘একুশ তাপাদার’ বিবিসির কাছে বর্ণনা করেছেন তার পলাতক জীবনের অভিজ্ঞতা:
নীলাদ্রি চ্যাটার্জির হত্যার খবর পেয়ে প্রথমে শোকে মুষড়ে পড়লাম। এটা ছিল প্রথম অনুভূতি। কিন্তু তারপর ধীরে ধীরে শোকের জায়গায় এল ভয়ের অনুভুতি। এটা আমার ভাগ্যেও ঘটতে পারে। ঘরের ভেতর ঢুকে যখন একজন মানুষকে কুপিয়ে হত্যা করে গেল, তার চেয়ে অসহায় অবস্থা আর কি হতে পারে। আমার নিজের ঘরেই এখন আর আমি নিরাপদ নই।
আমাদের যখন তালিকা করে প্রথম হত্যার হুমকি দেয়া হয়, তখন আমরা এটা ততটা সিরিয়াসলি নেইনি। কিন্তু যখন একের পর এক হত্যাকান্ড শুরু হলো, তারপর থেকে আমরা অনিরাপদ বোধ করতে থাকি।
আমার স্বাভাবিক চলাচল এখন গন্ডিবদ্ধ করে ফেলতে হয়েছে। চোখকান সব সময় খোলা রাখতে হয়। কিন্তু যখন কাজে যেতে হয়, তখন কিছু সময় তো একা থাকতেই হয়। আমাকে নিজের জীবনের রুটিনই পাল্টে ফেলতে হয়েছে। যেমন আমি প্রতিদিন একই সময়ে ঘর থেকে বের হই না। একই সময়ে ঘরে ফিরি না। এরকম করে আমাকে চলতে হচ্ছে। আমার অনেক পুরোনো ব্লগ ডিলিট করে ফেলতে হয়েছে। হাইড করে ফেলতে হয়েছে।
অনেক বিষয়েই এখন আর নতুন করে লিখছি না। নিজের ভেতরে চেপে রাখতে হচ্ছে। নিজের ভাবনা আর প্রকাশ করতে পারি না। আমার অনেক লেখক এবং ব্লগার বন্ধুরাও তাই করছেন। আক্রান্ত হওয়ার ভয় কাজ করছে সবার মধ্যে। পরিবারের সদস্যরাও সবসময় আতংকে থাকেন। চিন্তায় থাকেন। অনেক ব্লগার বন্ধু দেশ ছাড়ছেন। আমি এখনো সে লাইনে চিন্তা করিনি। কিন্তু এখন যে অবস্থা দেখছি, জানিনা কতদিন দেশে থাকা সম্ভব হবে। দেশের বাইরে যাওয়া, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছে কখনোই ছিল না। দেশ-সমাজ নিয়ে অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু এখন এই দেশ আমার জন্য কতটা নিরাপদ, সেটা নিয়েই আমি উদ্বিগ্ন। সূত্র : শীর্ষ নিউজ