সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৫০ পূর্বাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম: সিলেটের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীর আহ্বানে ঢাকায় উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে এমএজি ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের লক্ষ্যে বিভিন্ন সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান, পুরাতন কারাগারের স্থলে গ্রীণ পার্ক নির্মাণ, নগরীতে গ্রীণ সড়ক, সুরমা নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ ও অত্যাধুনিক পাঁচটি গোলচত্বর নির্মাণ, পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। রোববার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৬টায় দুইঘন্টাব্যাপি বৈঠক অর্থমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক, পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ এতে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে আলোচনায় উঠে আসা সকল সমস্যার সমাধান করা। বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী আশ্বস্ত করেন, সিলেট থেকে আভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে যেসকল সমস্যা রয়েছে তা চিহ্নিত করে গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় এসব সমস্যার সমাধান করা হবে। এছাড়া সিলেট থেকে ফ্লাই দুবাই এর ফ্লাইট শিগগিরই চালু হবে। ওসমানী বিমানবন্দরে বিজনেস ও ফার্স্ট ক্লাস পৃথক লাউঞ্জ তৈরির আশ্বাস দেন মন্ত্রী। তিনি জানান, ওসমানী বিমানবন্দরকে পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপ দিতে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নতুন করে ‘গ্রেটার প্ল্যান’ হাতে নেয়া হচ্ছে। বৈঠকে সিলেটের ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সিলেট নগরী ও নগরীর বাইরের বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নের উপর গুরুত্বারূপ করা হয়।
গৃহিত সিদ্ধান্তের মধ্যে আরো রয়েছে, সিলেট নগরী ও নগরীর বাইরে আধুনিক পাঁচটি গোলচত্বর নির্মাণ করা। পয়েন্টগুলো হচ্ছে, শহরতলীর হযরত শাহপরান (রহ.) মাজার গেইট, টুকেরবাজার (তেমুখি) পয়েন্ট, কদমতলী মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, কাজিরবাজার (শেখঘাট) সেতুর প্রবেশমুখ ও ধোপাদিঘিরপাড় (হাফিজ কমপ্লেক্স) পয়েন্ট। বৈঠকে সিলেট নগরীর পুরাতন কারাগারের স্থলে সবুজ পার্ক নির্মাণের বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। যেখানে পুরনো ঐতিহাসিক নিদর্শন ও স্থাপনা সংরক্ষণের মাধ্যমে এই পার্কে জাদুঘর, শিশুদের বিনোদনকেন্দ্র, কালচারাল সেন্টার, নাট্যমঞ্চসহ বিভিন্ন বিনোদনমূলক কার্যক্রমেরও কেন্দ্রবিন্দু হবে এই পার্ক। এছাড়াও সুরমা নদীর দুইপাড়ে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, নগরী ও নগরীর বাইরে দু’টি গ্রীণ রোড নির্মাণসহ সিলেটকে আধুনিক ও মডেল নগরী হিসেবে উপস্থাপনের লক্ষ্যে বিশেষ উন্নয়ন পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। এতে অর্থমন্ত্রীসহ উপস্থিত সিলেটের নেতৃবৃন্দ সন্তুষ্ঠি প্রকাশ করে দ্রুত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে স্ব স্ব অবস্থান থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব এসএম গোলাম ফারুক, জাতিসংঘস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের সাবেক প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. একে আব্দুল মোমেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ ড. আহমদ আল কবির, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এর পরিচালক ও সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সিলেট চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ, সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি হাসিন আহমদ, সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যুরো প্রধান মকসুদ আহমদ মকসুদ, অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব জাকারিয়া আহমদ, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা জাবেদ সিরাজ, কিশোর ভট্টাচার্য জনি, মোগলগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান হিরণ মিয়াসহ সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ।