বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৩১ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার: এক সময়ের ‘সামাদ-সুরঞ্জিত’ দ্বন্দ্ব এখনও ছায়া হিসেবে রয়ে গেছে বলে মনে করেন দিরাই-শাল্লার রাজনীতি সচেতন মহল। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য (দক্ষিণ সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর) প্রয়াত আব্দুস সামাদ আজাদের ঘনিষ্টজনেরা এখন পর্যন্ত তার আদর্শেই কাজ করে যাচ্ছেন বলেও গুঞ্জন শুনা যায়। আর এর যথেষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয়েছে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ঘোষিত এবারের জেলা পরিষদ নির্বাচনে। বিভিন্ন সূত্রে যাওয়া তথ্যে জানা যায়, এক সময়ের বামপহ্নী নেতা ও ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, সুনামগঞ্জ-২ আসনের (দিরাই-শাল্লা) সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত জেলা আওয়ামীলীগের একাংশের নিয়ন্ত্রণ করলেও মরহুম আব্দুস সামাদ আজাদের ঘনিষ্ট সাবেক সংসদ সদস্য ও সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মতিউর রহমান ‘সামাদ’ গ্র“পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সামাদ-সুরঞ্জিতের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের ফলেই জেলায় আওয়ামীলীগ দুই গ্র“পে বিভক্ত। এরই অংশ হিসেবে এবারের অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে সামাদ বলয়ের প্রার্থী ছিলেন নূরুল হুদা মুকুট ও সুরঞ্জিত বলয়ের প্রার্থী ছিলেন সাবেক জেলা প্রশাসক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ঘোষিত প্যানেলের প্রার্থীদেরকে বিজয়ী করতে জেলার ৫ জন সংসদ সদস্য একজোট হয়ে কাজ করেছেন বলে গুঞ্জন থাকলেও তরী নিয়ে পার হতে না পারায় এখন তাদের নানা ধরণের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের দিরাই-শাল্লায় ভরাডুবি হওয়ায় তাদের মধ্যে এক ধরণের হতাশা বিরাজ করছে।
এবারের অনুষ্ঠিত জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ ঘরণার দুইজন থাকলেও নির্বাচনে বিদ্রোহী হিসেবে পরিচিত জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক নূরুল হুদা মুকুট (মোটর সাইকেল) প্রতীকে ৭৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এনামুল কবীর ইমন (চশমা) ৪১৬ ভোট পেয়েছেন।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ ঘোষিত প্যানেলের ৮নং ওয়ার্ড (দিরাই উপজেলা) সদস্য প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ ছইল মিয়া পেয়েছেন ৩৮ ভোট। আর বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল হক পেয়েছেন ৫৪ ভোট। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ঘোষিত প্যানেলের প্রার্থী ১৬ ভোটে বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছে হেরেছেন। ৯নং ওয়ার্ড (শাল্লা উপজেলা) সদস্য প্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল লেইছ চৌধুরী পেয়েছেন ১৮ ভোট। আর বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা বঙ্গবন্ধু যুব পরিষদের সভাপতি কারাবন্দী নেতা আবু আব্দুল্লাহ চৌধুরী মাসুদ পেয়েছেন ৩০ ভোট। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ঘোষিত প্যানেলের প্রার্থী ১২ ভোটে হেরেছেন।
এদিকে সংরক্ষিত আসন ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের প্রার্থী দিরাই উপজেলা আওয়ামী মহিলালীগের আহ্বায়ক রাজরাণী চক্রবর্তী পেয়েছেন ৮৯ ভোট। আর জেলা মহিলালীগ নেত্রী জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জিতুর স্ত্রী ফারহানা ইয়াসমিন সীমা পেয়েছেন ১১১ ভোট। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ঘোষিত প্যানেলের প্রার্থী ২২ ভোটে হেরেছেন।