রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন
মুহাম্মদ আব্দুল বাছির সরদার: সরকার দলীয় আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের দুইপক্ষের জলমহাল দখল নিয়ে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদককে মামলায় জড়ানোর প্রতিবাদে সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠন সমাবেশ করেছে। সোমবার বিকেলে স্থানীয় থানা পয়েন্টে দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আছাব উদ্দিন সরদারের সভাপতিত্বে ও দপ্তর সম্পাদক বিকাশ রায়, পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়ার যৌথ পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট সোহেল আহমদ, সিরাজ-উদ-দৌলা তালুকদার, প্রেসক্লাব সভাপতি হাবিবুর রহমান তালুকদার, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট অভিরাম তালুকদার, জগদল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিবলী আহমেদ বেগ, রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজুয়ার খান, ভাটিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান কাজী, যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন রায়, মোহন চৌধুরী, কৃষকলীগের আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম, শ্রমিকলীগের সভাপতি আবুল কাসেম, ছাত্রলীগের সভাপতি উজ্জ্বল চৌধুরী প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এডভোকেট সোহেল আহমদ স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্য গণমাধ্যম কর্মীদের সরবরাহ করা হয়। এতে উল্লেখ করা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একরার বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য দিরাই হতে অস্ত্র দেয়া হয়েছিলো। গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এই জলমহালের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়, র্যাব দিয়ে এলাকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার, কিন্তু তা করা হয়নি। অস্ত্র উদ্ধার করা গেলে এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতো না। একরারের এক ভাই জামায়াত সদস্য ও এক ভাই সিলেট ছাত্রদলের অস্ত্রধারী ক্যাডার। সে ঘটনার দিন সিলেট থেকে অবৈধ অস্ত্র ও ভাড়াটিয়া খুনিদের নিয়ে এসে জলমহাল দখল করতে যায়। সেখানে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজন লোক মারা যায়। নিহত লোকগুলো কারা, জলসহালের সাথে তাদের কি সম্পর্ক, সেদিন তারা সেখানে কেন গিয়েছিল, এসব বিষয় নিয়ে সঠিক তদন্ত করলেই আসল খুনি কারা, তা বেরিয়ে আসবে। ঘটনার পরপরই দিরাই উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সাথে দেখা করে বিষয়টি অবগত করানো হয়েছে। তিনি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিদের বের করতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জানুয়ারি উপজেলা ঘোড়ামার সাতপাকিয়া প্রকাশিত জারলিয়া জলমহালের দখল নিয়ে জলমহালের ইজারাদার দক্ষিণ নাগেরগাঁও মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সাথে একরার বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনায় তিনজন নিরীহ লোক নিহত হয়। ১৯ জানুয়ারি ইজারাদার ধনঞ্জয় দাস বাদী হয়ে একরার হোসেনসহ ২৯ জনকে আসামী করেন এবং একরার হোসেন বাদী হয়ে দিরাই উপজেলা চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান তালুকদার, দিরাই পৌরসভার মেয়র মোঃ মোশাররফ মিয়া, উপজেলা আওয়ামীলীলগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক জিয়াউর রহমান লিটন ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল মিয়াসহ ৩৯ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন।